দেশের ৬ কোটি নাগরিকের তথ্য ইন্টারনেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। এই তথ্য বিক্রিতে পতিত সরকার বিদেশী একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলো। সরকারিভাবেও বেসরকারি কোম্পানির কাছে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এভাবেই ডিজিটাল দুনিয়ায় তথ্যসুরক্ষা লঙ্ঘিত হচ্ছে। এই অবস্থার উত্তরণে সংবিধানের ৪৩-এর খ ধারা সংশোধন করে ইন্টারনেটকে সবার জন্য মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
সংগঠনটির সঙ্গে একমত হয়ে খাত সংশ্লিষ্টরা মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি এই প্রযুক্তি ও ডাটা উন্মুক্ত রাখতে সরকারের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে এই দাবি জানানো হয়।
মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন প্রযুক্তি বিশ্লেষক ফাহিম মাশরুর, তানভীর হাসান জোহা, আইআইজেএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম, আইএসপিএবি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাইয়ুম রাশেদ, প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের প্রমুখ।
বক্তব্যে আইআইজিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ২০২৪ সালে এসে শিক্ষা ও চিকিৎসা অনেকাংশে ইন্টারনেটনির্ভর হয়ে পড়েছে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের ৪র্থ ও ৫ম মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হলে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিকল্প নেই। তাই এ নিয়ে এখন সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। সাফাই গাইতে নয় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ব্রডব্যান্ডের দাম কম। এই দাম আরো কমিয়ে আনতে এনটিটিএন ও ট্রান্সমিশন সবচেয়ে বড় বাধা। সরকার ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অবকাঠামো দুইটি বেসরকারি এনটিটিএনের কাছে জিম্মি রয়েছে। পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার মতো এটিও সরকারের কাছে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রকে দায়বদ্ধ করতে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র যেন এক্ষেত্রে ইন্টারফেয়ার না করে সে বিষয় গুরুত্বারোপ করেন ফাহিম মাশরুর। তিনি বলেন, ওটিটিকে বেক্সিমকোর মতো কোম্পানির জন্য অ্যাকসেস দেয়া যাচ্ছে না। একইভাবে এনটিটিএন-কে সরকারই মনোপোলি ব্যবসার সুযোগ করে দিয়েছে। বিভিন্ন লেয়ারের বাধা তুলে দিলে ইন্টারনেটের দাম ২৫ শতাংশ কমে যাবে। তবে ইন্টারনেটের দাম কমাতে এবং নাগরিকের তথ্য সুরক্ষায় ‘ফোন ট্যাপ’ এর নিয়ম-কানুনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। একইভাবে এনটিএমসি এখনো বিলুপ্ত না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন ফাহিম মাশরুর।