বান্দরবানের মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের মিনি চিড়িয়াখানা থেকে দুটি ভালুক ও ১৩টি মায়া হরিণসহ ২৩টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করে নিয়ে গেছে বন অধিদপ্তর। বুধবার অভিযান চালিয়ে এসব বন্য প্রাণী নিয়ে যান বন অধিদপ্তরের লোকজন।বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা নুর জাহান বেগম বলেন, বেলা ৩টার দিকে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের মিনি চিড়িয়াখানায় এসে পৌঁছান বন অধিদপ্তরের তিনটি বিভাগের লোকজন। তাঁরা খাঁচাবদ্ধ ছয়টি বানর, দুটি ভালুক, একটি বনবিড়াল ও ১৩টি মায়া হরিণ খাঁচা থেকে বের করে নিয়ে যান। বন্য প্রাণীগুলো প্রথমে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে নিয়ে আলাদা করে রেখে চিকিৎসা করা হবে। এরপর পার্কে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
নুর জাহান বেগম আরও বলেন, মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের মিনি চিড়িয়াখানায় বন্য প্রাণীগুলো বন্দী করে রাখা হয়েছিল। বন্য প্রাণী রাখতে হলে আগে অনুমতিপত্র নেওয়ার বিধান রয়েছে। ওই বিধান অনুযায়ী, যে প্রজাতির বন্য প্রাণী যে পরিবেশে জীবন যাপন করে, সে ধরনের পরিবেশ ও বাসস্থান দেখে অনুমতিপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে বন্য প্রাণী রাখার ন্যূনতম কোনো পরিবেশ নেই। ফলে ভালুক ও মায়া হরিণগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
তাই বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের বিধান অনুযায়ী, বন্য প্রাণীগুলো সাফারি পার্কে নেওয়া হয়। তা ছাড়া বান্দরবানের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বন্য প্রাণীগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়ার ব্যাপারে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হয়েছে।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের প্রাণিসম্পদ চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন বলেছেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখার কারণে পুরুষ ভালুকটি ছত্রাকজাতীয় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়েছে। তার বাঁ পা ভেঙেছে অথবা অবশ হয়ে পড়েছে। ভালুক, মায়া হরিণ, বানরসহ সব প্রাণী আলাদা করে রেখে চিকিৎসা করে সুস্থ না হলে পার্কে উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে না।
আভিযানিক দলের অন্যদের মধ্যে ছিলেন প্রাণপ্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংগঠন সেভ দ্য নেচারের চেয়ারম্যান এ এন এম মোয়াজ্জেম হোসাইন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে আরও কয়েকটি চিড়িয়াখানার নামে বন্য প্রাণী বন্দিশালা আছে। সেগুলোও বন্ধ করার ব্যাপারে তাঁরা কাজ করছেন। ইতিমধ্যে কয়েকটির প্রাণী উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আসিফ রায়হান বলেন, মেঘলা মিনি চিড়িয়াখানার বন্য প্রাণীগুলোর ব্যাপারে বহু আগে থেকে বন অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। আরও আগে প্রাণীগুলো নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তারা হয়তো তাদের সীমাবদ্ধতার কারণে এত দিন নিয়ে যেতে পারেনি।