সরকারি-বেসরকারি সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত সল্যুশন ও উদ্ভাবন ভাবনাকে প্রযুক্তিপ্রেমীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে রাজধানীর প্রশাসনিক এলাকা আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের নিচ তলায় বসেছে ‘টেলিকম ও ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা-২০২৫’। বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে এই মেলা শুরু হয়। শেষ হবে বিকেলে।
মেলায় সরকারি-বেসরকারি সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত সল্যুশন ও উদ্ভাবন ভাবনা দেখানো হচ্ছে। দেশের ২০টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৩২টি ডিজিটাল উদ্ভাবন প্রদর্শন করা হচ্ছে। সেসাথে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম খাতের প্রতিষ্ঠিত দেশী-বিদেশী আইটি ও টেলিকম প্রতিষ্ঠান এবং দুইটি মোবাইল অপারেটরের উদ্ভাবনী উদ্যোগ।
প্রদর্শনীর শুরুতেই রয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সহায়তায় উদ্ভাবিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ইমেজ প্রসেসিং সল্যুশন-দুরবীন এবং স্মার্ট ডিভাইস অ্যাকসেস সিস্টেম। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভাবিত এই টেলিসেবাটি প্রদর্শন করছে জেড টেক।
মেলায় মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি প্রদর্শন করছে তাদের ডিজিাটল টুইন। ৬জি নেটওয়ার্কের সাহায্যে দূর থেকেই একাধিক অপারেটরের মাধ্যমে ফিজিক্যাল অবজেক্ট ব্যবহার করে ব্লক তৈরি করতে পারে এমন একটি ধারণাও তুলে ধরেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
স্পার্ক নামের একটি সল্যুশন নিয়ে এসেছে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি)। এছাড়াও বাংলা ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ ও ডিপলার্নিং মেথডে হাতে লেখা প্রশ্নের উত্তর মূল্যায়নের স্বংক্রিয় প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে গাজীপুরের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।
শুধু তাই নয়, সংলাপ নামে বাংলা এআই ভয়েস অ্যাসিস্টেন্ট এবং নবতরঙ্গ নামে দুর্যোগপূর্ণ সময়ের জন্য এআই অপ্টিমাইজড শক্তিশালী মেশ নেটওয়ার্ক প্রদর্শন করছে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি।
পিটিপি মাইক্রোওয়েভ এবং এলটিই প্রযুক্তিতে দুই বা ততোধিক সিম ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে একটি হাইব্রিড রুরাল ইন্টারনেট সল্যুশনের রূপরেখা দেখাচ্ছে ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের এক দল শিক্ষার্থী।
একইভাবে ৩টি প্রকল্প ভাবনা তুলে ধরেছে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) দেখাচ্ছে দেশের ইলেকট্রিক্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন খাতের ব্যর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সার্কুলার ইকোনোমিকে সমৃদ্ধ করার পথ।
বরাবরের মতো পঙ্গুত্বের অভিশাপ ঘুচে দেয়ার প্রযুক্তি নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছে রোবো লাইফ টেকনোলজিস। এবার এইএমজি কন্ট্রোলড প্রস্থেটিক হাতের সঙ্গে তারা নতুন করে যুক্ত করেছে সৌরশক্তির ছোট আকারের টেলিকো টাওয়ার এবং ডিজিটাল জীবনের নিরপত্তার একটি সল্যুশন।
উদ্যোক্তাদের মধ্যে এআইনির্ভর ইশারা ভাষার প্রযুক্তি দেখাচ্ছে সাইনটক। আর্টপডস নামে প্রান্তিক মানুষের জন্য অন্তর্ভূক্তিভূক্তিমূলক নেটওয়ার্ক সল্যুশন নিয়ে এসেছে স্মার্ট বিল্ড। ভবিষ্যত বিনির্মাণের টেলিকম সল্যুশনের ধারণা দিচ্ছে স্ক্র্যাপ ভেঞ্চর।
নিজেদের উদ্ভাবিত ধারণাগুলো তুলে ধরছে ই-বিতানস, রেড ডিজি, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, ইডটকো বাংলাদেশ ও লিংক থ্রি।
মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে রিয়েল টাইমে সহিংসতা শনাক্তের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে বাংলালিংক। এছাড়া তিনটি বাণিজ্যিক প্রকল্প এনেছে গ্রামীণফোন।
এসব প্রকল্পের মধ্যে দিন শেষে পুরস্কৃত করা হবে ৫ সেরা উদ্ভাবনী ধারণা ও প্রকল্পকে। সনদপত্র এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নে বিটিআরসির সহায়তার সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিজয়ীদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকারীকে ৩ লাখ টাকা, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় উদ্ভাবনকে ১ লাখ টাকা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে। এছাড়াও চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ৭৫ হাজার টাকা এবং পঞ্চম পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।