বিশ্ব পর্যটন দিবস: বৃষ্টিবিলাসে যেতে পারেন এই ৫টি রিসোর্টে

প্রকাশ: বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Image টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
Techvoice পর্যটন
  ছবি: সংগৃহীত
একটু নির্জনতা আর প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছুটা সময় হতে পারে হ্যাপি হরমোন রিলিজের একটি উপায়; তাই বৃষ্টিবিলাস কিংবা একান্তে অবকাশযাপনের জন্য যেতে পারেন এই দারুন পাঁচটি রিসোর্টে। দেওয়া হলো এদের বিস্তারিত।

রাইন্যা তুগুন ইকো রিসোর্ট, কাপ্তাই

এই রাইন্যা টুগুন ইকো রিসোর্ট যেন একটুকরা পার্বত্য চট্টগ্রাম। রাইন্যা টুগুনের মধে৵ ছোট ছোট যে টিলা আছে, সেগুলোর নামের মধ্যে আছে বেশ বৈচিত্র্য-ফুরোমোন, ফালিটাঙ্যা চুগ, কেওক্রাডং, আলুটিলা, সাইচলমোন; যেগুলো দেখার জন্য ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন বারবার। ফালিটাঙ্যাচুগের খোলা মাঠে আপনি মেতে উঠতে পারেন প্রিয় মানুষদের সঙ্গে আড্ডায়।

রাইন্যা টুগুন ইকো রিসোর্টটি কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের খুব কাছে হলেও প্রশাসনিকভাবে এটি রাঙামাটি সদর উপজেলার আওতাধীন। এর আশপাশে আছে কামিলাছড়ি, মগবান ইউনিয়ন, রাঙামাটি সদর উপজেলা ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা। রাঙামাটি শহর থেকে কাপ্তাইয়ের দিকে ১৪ কিলোমিটার।

নির্জনে অবকাশযাপন যাঁদের ভালো লাগে, তাঁদের জন্য দারুণ এক গন্তব্য রাইন্যা টুগুন ইকো রিসোর্ট। এটি হাতিপ্রবণ এলাকা, তাই সতর্কতা মেনে চলতে হবে। এখানে একটি সেনানিবাসও রয়েছে ।

পিয়ালি ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড কালচার সেন্টার, সুন্দরবন

সুন্দরবনের এই ইকো রিসোর্ট যে আপনাকে মুগ্ধ করবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সুন্দরবনের গভীরের বুনো ঘাসের গন্ধে ভরা, নাম না জানা পোকার ডাকে মুখর এই জায়গার নির্মাণশৈলীতে ব্যবহার করা হয়েছে সুন্দরবনের গাছ।

এখানে সুন্দরবনের গোলপাতায় পরিবেশন করা হয় স্থানীয় মানুষদের ঐতিহ্যবাহী খাবার। আগত অতিথিদের জন্য আছে খোলা ডেক ও রেস্তোরাঁ, যেখানে অনায়াসে উপভোগ করতে পারবেন একান্ত অবকাশ। বর্ষণমুখর একটি সন্ধ্যা কিংবা বৃষ্টির ঝুম ঝুম শব্দের সঙ্গে মাঝরাত পর্যন্ত চলতে পারে গান বা আড্ডা, যদি পেয়ে যান সেই সুযোগ। নৌকায় সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থাও আছে। দেখা মিলবে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রাণীর।

তীরে নীড়ে, কক্সবাজার

কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ রাস্তায় ইনানি সৈকতের আগে প্যাঁচার দ্বীপের এই রিসোর্ট এককথায় সমুদ্রবিলাসের জন্য এক দারুণ গন্তব্য। প্রকৃতির সব উপাদান দিয়ে সাজানো এই রিসোর্ট। রয়েছে নিজস্ব একটুকরা সৈকত, বালিয়াড়ি পেরিয়ে নির্জন সমুদ্রসৈকতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা যায়। সে সময় যদি আকাশে থাকে মেঘ আর সমুদ্রের গর্জন, তবে কেমন হবে সেই পরিবেশ তা কল্পনা করতে পারেন। এখানে আছে দোলনা, ট্রি-হাউস। আছে চাঁদনৌকায় ভ্রমণ ও নৌকায় ভেসে ভেসে খাওয়া, কায়াকিংসহ নান্দনিক সব ভ্রমণের আয়োজন।

শ্রীমঙ্গল টি রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাশনাল মিউজিয়াম, শ্রীমঙ্গল

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে খানিকটা দূরে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের কাছে এর অবস্থান। ব্রিটিশ নির্মাণশৈলীতে তৈরি শত বছরের পুরোনো বাংলো আর চা-বাগানের ভেতরের রাস্তা আপনাকে মুগ্ধ করবে। ২৫ একরের বেশি সবুজ পাহাড়ের মধ্যবর্তী এক অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে এর অবস্থান। মূলত এক ব্রিটিশ কনসালট্যান্ট এটি নির্মাণ করেন।

এর মধ্যে রয়েছে পার্ক, সুইমিং পুল, লন টেনিস, টেবিল টেনিস ও ব্যাডমিন্টনের ব্যবস্থা, চায়ের জাদুঘর, মাধবপুর লেক, খাসিয়া পল্লি, চা-বাগান, মণিপুরি গ্রাম, নীলকণ্ঠ চায়ের কেবিন। নির্জনে কাটাবার জন্য দারুণ জায়গা। চা-বাগানের বৃষ্টি, ঝিঁঝি পোকার শব্দ, চায়ের সোঁদা গন্ধ, পেছনে বাজছে ধ্রুপদি কোনো ছন্দ আর হাতে কোনো রহস্যকাহিনির বই, আর কী চাই!

ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা

যাঁদের হাতে সময় কম; কিন্তু শান্ত কোনো জায়গা খুঁজছেন, তাঁদের জন্য ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা দারুণ জায়গা হতে পারে। নান্দনিক ভাওয়াল রিসোর্ট ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে বেশ পছন্দের অবস্থানে রয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজীপুরের বাড়ৈপাড়ার মির্জাপুর ইউনিয়নের নলজানী গ্রামে ৩৫ একর জমির ওপর নান্দনিক এই রিসোর্ট অবস্থিত। সবুজে পরিবেষ্টিত ভাওয়াল রিসোর্টে যেমন খুঁজে পাওয়া যাবে মনের প্রশান্তি, তেমনি পাওয়া যাবে জীবনকে একটু উপভোগ করার সুযোগ। ভাওয়াল রিসোর্টের চেক ইন টাইম বেলা ২টা এবং চেক আউট টাইম দুপুর ১২টা।

রিসোর্টে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই এসে যাবে ওয়েলকাম ড্রিংকস। মোট ৬১টি ভিলা রয়েছে রিসোর্টে, যেগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এক বেডরুম ভিলা, এক বেডরুম স্যুইট, দুই বেডরুম স্যুইট। প্রতিটি ভিলার রুমই শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এবং সঙ্গে রয়েছে এলসিডি টিভি। পছন্দ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিন আপনার থাকার ভিলা বা রুম।

এ ছাড়া তিন বেলা রকমারি খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে রিসোর্টটিতে দারুণভাবে সাজানো রেস্তোরাঁটিতে। নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা রয়েছে প্রতিটি ভিলায়। রিসোর্টটিতে রয়েছে পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা। গাড়ি নিয়ে যাওয়ার এবং সেটি রাখা নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না। ভাওয়াল রিসোর্টে যাওয়ার পথ না চিনলেও কোনো সমস্যা নেই, গুগল ম্যাপের সাহায্যে খুব সহজেই চিনে নেওয়া যাবে যাওয়ার পথ। সূত্র: হাল ফ্যাশন

 লেখা: নাদিয়া ইসলাম
image

আপনার মতামত দিন