শিশুদের মধ্যে কৌতূহল, বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও সৃজনশীলতা গড়ে তুলতে মহাকাশ বিজ্ঞান, স্পেস রোবটিক্স, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, সৌরজগৎ, গ্যালাক্সি, প্রোগ্রামিং ও কসমোলজির মতো বিষয়গুলোকে ঘিরে স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হলো “স্পেস এক্সপ্লোরেশন অলিম্পিয়াড”।
শুক্রবার রাজধানীর আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের বয়স অনুযায়ী দুটি প্রিলিমিনারি এবং সেকেন্ডারি অনলাইন এক্সামের মাধ্যমে বাছাইকৃতদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো চূড়ান্ত পর্ব।
সারাদেশ থেকে ১০০ জন্য ক্রু মেম্বার ফাইনাল এক্সামে অংশগ্রহণ করেন। চূড়ান্ত পর্বে তিন গ্রুপের ৯ জনকে রানার্স আপ, দ্বিতীয় রানার্স আপ এবং চ্যাম্পিয়নসহ একজন পেয়েছে এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড।
পুরুস্কার প্রাপ্তরা হলেন ক্যাটেগরি ৬-৯ বছর ২য় রানার্স আপ হয়েছেন নেভি এ্যাংকরেজ স্কুল এন্ড কলেজ চট্টগ্রাম থেকে মোহাম্মাদ আয়মান আদিল, রানার্স আপ হয়েছেন নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কুমিল্লা থেকে জাদিদা জাওয়াদ ত্রানা এবং চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ইংলিশ একাডেমী শরীয়তপুর থেকে কে আর অহনা।
ক্যাটেগরি ১০-১২ বছর ২য় রানার্স আপ হয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ ঢাকা থেকে রাইসা আমিন, রানার্স আপ হয়েছেন গ্রীন হিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সিলেট থেকে ওয়ারেশা রাহমান এবং চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন হলি ক্রস গার্লস হাই স্কুল থেকে শ্রাগভী দাস সইলি।
ক্যাটেগরি ১৩-১৪ বছর ২য় রানার্স আপ হয়েছেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ কলেজ থেকে লিদিকা রাহমান, রানার্স আপ হয়েছেন নেভি এ্যাংকরেজ স্কুল এন্ড কলেজ ঢাকা থেকে জারিফ মাহমুদ এবং চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এন আলম মেরিট কেয়ার স্কুল নারায়ণগঞ্জ থেকে আমিনুর রহমান সাজিম।
এই বছর সেরাদের মধ্য থেকে সেরা এক্সিলেন্স এওয়ার্ড পেয়েছেন ইংলিশ একাডেমী শরীয়তপুর থেকে কে আর অহনা।
পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতের বিশ্ব গড়ার নেতৃত্ব থাকবে আজকের ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের হাতে। তাদের মেধা, কল্পনা ও উদ্ভাবনী চিন্তাই আমাদের আগামী দিনের শক্তি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে শিশুরা যদি আনন্দের সঙ্গে শিখতে পারে, তবে তাদের শেখা হবে আরও কার্যকর ও গভীর। মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রতি শিশু-কিশোরদের আগ্রহ বাড়াতে ‘স্পেস এক্সপ্লোরেশন অলিম্পিয়াড’ এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে দেশের বিজ্ঞান শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী।“
আয়োজনটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্রিয়েটিভ বিজনেস গ্রুপ এর চেয়ারম্যান জনাব মুনির হোসেন। তিনি বলেন, “শিশু-কিশোরদের জ্ঞান-বিকাশ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত সময়োপযোগী ও কার্যকর। তারা এখানে হাতে-কলমে শিখছে, নতুন ধারণা সম্পর্কে জানতে পারছে, যা তাদের একাডেমিক অগ্রগতিকেও ত্বরান্বিত করবে। স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের এই ধরনের বিজ্ঞানভিত্তিক উদ্যোগে আমরা গর্বের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।“
স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্প-এর প্রেসিডেন্ট আরিফুল হাসান অপু বলেন, “আমাদের শিশু-কিশোররাই আগামী দিনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশের নির্মাতা। তাদের কল্পনা, জিজ্ঞাসা এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে জাগ্রত করতেই আমাদের এই ‘স্পেস এক্সপ্লোরেশন অলিম্পিয়াড’ আয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি-শিক্ষা তখনই কার্যকর হয়, যখন তা আনন্দদায়ক ও হাতে-কলমে শেখার মাধ্যমে অর্জিত হয়। আজ যারা পুরস্কার পেয়েছে, তারা শুধু বিজয়ী নয়-তারা ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক। ভবিষ্যতেও আমরা দেশের প্রতিটি শিশু-কিশোরের মাঝে বিজ্ঞানমনস্কতা ও মহাকাশ বিষয়ক কৌতূহল ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাব।”
প্রসঙ্গত, ৬ থেকে ৯, ১০ থেকে ১২ এবং ১৩ থেকে ১৪ বছর বয়সি ছাত্র ছাত্রীরা তিনটি গ্রুপে এ অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে। অলিম্পিয়াড কে কেন্দ্র করে সারা দেশের আটটি বিভাগে কিডস স্পেস ক্যাম্প, ১৫০টি স্কুল ক্যাম্পেইন, জেলাভিত্তিক ডাটা বুটক্যাম্প হয়েছে। এ ছাড়া ওই আয়োজনে স্পেস সায়েন্টিস্ট, রিসার্চারগন ১২ টি স্পেস টক এর মাধ্যমে বাচ্চাদের স্পেস বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন । প্রিপারেশন জন্য ছিলো অনলাইন কুইজ প্যাকটিস এবং অত্যাধুনিক মক টেস্ট সফটওয়্যার যেখানে একজন প্রতিযোগী নিজেই নিজেই মেধা যাচাই এর সুযোগ পেয়েছেন।