মেটা ও মাইক্রোসফটের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যয় বৃদ্ধিতে ওয়াল স্ট্রিটের উদ্বেগ

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৪
https://mail.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png উজ্জ্বল এ গমেজ
https://mail.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
পরিবর্তনশীল সময়ের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ডাটা সেন্টার নির্মাণে ব্যয় বাড়িয়েছে বিশ্বের দুই প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট ও মেটা। এই ব্যয় বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওয়াল স্ট্রিট। জায়ান্ট দুটির বিশাল বিনিয়োগ থেকে দ্রুত লাভের জন্য আরও দ্রুত ফলাফল আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাইক্রোসফট ও মেটা উভয় কোম্পানি বুধবার জানিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিনিয়োগের কারণে তাদের মূলধন ব্যয় বাড়ছে। মঙ্গলবার গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটও জানিয়েছে তাদের ক্রমান্বয়ে এই ব্যয় বাড়তে থাকবে।

রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, মার্কিন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম অ্যামাজন আজ বৃহস্পতিবার তাদের ফলাফল প্রকাশের জন্য প্রস্তুত। সম্ভবত এই পূর্বাভাসগুলোকেই বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবে। এই বড় পরিমাণের মূলধন ব্যয় বিশ্বের সেরা প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানির জন্য হুমকি হতে পারে।  

বুধবার পরবর্তী সময়ের ট্রেডিংয়ে বড় প্রযুক্তি শেয়ারগুলো পড়ে গেছে, যা কোম্পানিগুলোর সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরেছে। তারা সম্ভাবনময় প্রযুক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রকল্পগুলোর সাথে সাথে বিনিয়োগকারীদের স্বল্পমেয়াদী ফলাফলের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার মধ্যে সমন্বয় করার চেষ্টা করছে।

মেটার শেয়ার পরবর্তী সময়ের ট্রেডিংয়ে ২.৯% কমেছে। মাইক্রোসফটের শেয়ার মূল্য ৩.৬% পড়েছে। তবে উভয় কোম্পানি জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের লাভ এবং রাজস্বের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। অ্যামাজনের শেয়ারও কিছুটা কমেছে।

‘সময়ের আলোচিত প্রযুক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা অনেক ব্যয়বহুল বিষয়। আর এটি বাস্তবায়ন করার জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা অর্জন করা প্রয়োজন।’- বলেছেন গ্লোবালডেটার বিশ্লেষক বিয়াত্রিজ ভ্যাল।

তিনি বলেন, ‘বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে সক্ষমতা অর্জনে একটি প্রতিযোগিতা চলছে। আর এই প্রতিযোগিতার ফলাফল দেখার জন্য এবং প্রযুক্তির ব্যাপকতা গ্রহণের জন্য একটু বেশি সময় লাগবে।’

ভিজিবল আলফার অনুযায়ী, মাইক্রোসফট এখন একটি কোয়ার্টারের জন্য যে মূলধন ব্যয় করছে, তা ২০২০ অর্থবছর পর্যন্ত এর বার্ষিক ব্যয়ের চেয়ে বেশি হয়েছে। মেটার ক্ষেত্রে, একটি কোয়ার্টারের খরচ ২০১৭ সালের আগে যে পরিমাণ তারা বছরে ব্যয় করত, তার সমান।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের প্রথম অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে মূলধন ব্যয় ৫.৩% বৃদ্ধি পেয়ে ২০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর আরও ব্যয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে, কোম্পানি সতর্ক করে বলেছে তাদের মূল ক্লাউড ব্যবসা আজুরে, বৃদ্ধির ধারা সম্ভবত ধীর হবে, কারণ তাদের ডাটা সেন্টারের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

‘আমার মনে হয় বিনিয়োগকারীরা একটা বিষয়ে খেয়াল করেননি যে, মাইক্রোসফট প্রতি বছর যে পরিমাণে বিনিয়োগ করছে, এভাবে বিনিয়োগ করতে থাকলে, আগামী ছয় বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের এক শতাংশ পয়েন্টের মতো চাপ সৃষ্টি করবে।’ বলেছেন ডি এ ডেভিডসনের প্রযুক্তি গবেষণার প্রধান গিল লুরিয়া।

এদিকে, আগামী বছরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অবকাঠামো নির্মাণ খরচ আরও বেশি পরিমাণে বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মেটা।

সীমাবদ্ধতা উন্নয়নের গতিতে বিপর্যয় ঘটায়

সক্ষমতা অর্জনের সীমাবদ্ধতা প্রযুক্তিশিল্পে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। জনপ্রিয় প্রযুক্তিপণ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানি এনভিডিয়াসহ চিপ প্রস্তুতকারকরা চাহিদার সঙ্গে মানিয়ে নিতে রীতিমত সংগ্রাম করছে। ফলে ক্লাউড কোম্পানিগুলোর জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চিপের সরবরাহের তুলনায় এর চাহিদা অনেক বেশি দ্রুত বাড়ছে। ফলে তাদের অর্ডারের বৃদ্ধিতে সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে।  এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে আগামী বছরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চিপের সরবরাহের সংকট দেখা দিবে। সূত্র: রয়টার্স
image

আপনার মতামত দিন